দ্বৈত….
সুলতানা ফিরদৌসী
প্রতিদিন আফিস থেকে ফেরার সময় গাদাগাদি করে বাসের ভেতরে মানুষের ধাক্কায় অস্থির হয়ে যাই। বাস থেকে নেমে খানিকটা হাটতে হয় তারপর আমার বাড়ির সামনে পৌঁছে যাই। এই সময় টার মধ্যে যখন মানুষের চাপ ভেদ
করে ঐ রাস্তায় নামি তখন খুব ভাল লাগে তখন জোরে অক্সিজেন গ্রহণ করি,একটু আগে গিজগিজ ভিড়ে আমার দম যেন
বন্ধ হয়ে আসছিল কিন্তু এখন খুব করে মিষ্টি
হাওয়া খাওয়া হচ্ছে! দারুন এক অনুভূতি।
আমার পুরো দিনের এইটুকুন সময় জীবনে সবচেয়ে আনন্দদায়ক। আমি খুব আস্তে আস্তে পথের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরি। আমার আমি কে খুজেঁ পাই। লুকানো আমি! এভাবেই চলছিল যাপিত জীবন। তারপর….
একদিন একটি অদ্ভূত ঘটনা ঘটলো….. সেদিন
যথারীতি বাস থেকে নেমে পথে হাটছি…..
হঠাৎ মনে হলো কেউ যেন আমায় পিছু
নিচ্ছে অনুসরন করছে।আমি তাকাতেই
সে অন্য দিকে তাকাচ্ছে। আরেকটি ব্যাপার খেয়াল করলাম ও দেখতে অনেকটাই আমার মতো। আমার বেশ ভয় করছিল তার হাতে ধারালো একটা ছুড়ি ধরা। সেদিন অফিসে বেশ কাজের চাপ ছিল আমার ওভার টাইম
করতে হলো। বাস থেকে যখন নামলাম তখন
বেশ অন্ধকার। ওর হাতের ছুড়ি দেখে আমিও
একটি ছুড়ি সংগ্রহ করেছিলাম। আজকে যেহেতু সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে তাই আমি ছুড়িটি নিজের সাথে বহন করলাম।
মনে মনে বুদ্ধি করলাম ওকে পেলে আজ
একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবো। বেশ সন্ধ্যা তখন অন্ধকারাচ্ছন্ন পথ…. আমি হাটতে শুরু করলাম। কাউকেই দেখছি না। খানিকটা পথ
হাঠতেই তার ছায়া অনুভব করলাম। আমার পেছনে আছে সে। আমি হাটছি সেও হাটছে,
বাড়ির ঠিক সামনে। আমি বেশ হাফাচ্ছিলাম
লোকটা একদম আমার ঘাড়ের সাথে। আমার
ভিষন রাগ হলো আমি সহ্য করতে পারলাম না
চকিতে ঘুরে ওর পেটের মধ্যে ছুড়িটা ঢুকিয়ে
দিলাম। আশ্চর্যের কথা হলো সে খিকখিক করে হাসছিল। অদ্ভুতভাবে বলে উঠলো
তাকিয়ে দেখো ছুড়িতো তোমার পেটের ভেতরে ঢুকিয়েছো। আমি অবাক হয়ে দেখলাম
আমার রক্তাক্ত শরীর।ধপাস করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম। আমার আর কিছু মনে নেই।