জলের স্থাপত্য
নূহের প্লাবন শেষে পৃথিবীতে চাষ হয় তৌহিদের বীজ
আসহাবে কাহফের গুহাদিন ইতিহাস সকলের জানা
মুসার সাগর পার, ফেরাউন পরাজয় সত্য ষোলআনা
আগুন কাহিনী শেষে কোথায় লুকিয়ে আছে সেই বেত্বমিজ
নমরুদ দিন শেষে পৃথিবীতে ওঠে হেসে প্রিয় ইব্রাহিম
আপন আদর্শ রঙে ঈমাণের জজবায় কালোত্তীর্ণ বীর
মহান প্রভূকে ছাড়া অন্যখানে নিচু তার হয়নিতো শির
অন্ধকার ছায়াপথ কালোভূমি জুড়ে জ্বলে আলোর পিদিম
বিলকিস সিংহাসন মূহূর্তেই তুলে আনা বীর সুলেমান
জলের সেই স্থাপত্যে রেখে যান ঐশ্বর্যের মিহি কারুকাজ
সহস্র বছর পর প্রযুক্তির নিদর্শন ভাবনায় আজ
সাম্য ও সমতা বোধ বিবেকের করতলে রাখে মহিয়ান
সমাজ পছন্দ করে চাকচিক্য অশ্লীলতা কুকুর জীবন
এমন আহত দিনে কী করে যে ভালো থাকে মানুষের মন
পিঁপড়া কাহিনী
বিমূর্ত সকাল এক বয়ে আনে শীত আর অতীত কাহিনী
তখনো বারূদ ঘ্রাণে কেঁপেছিলো এভূমির শতত পরত
পিঁপড়া কাহিনী শেষে জেগে ওঠে ঘোড়াশালা আর ঐরাবত
আরো জাগে এভূমিতে কৃষাণ যুবক বৃদ্ধা আমার বাহিনী
পিতার পায়ের ছাপ দেখে দেখে কত বীর দিয়ে গেছে প্রাণ
দেখবে দেখবে বলে কেবলি একটি ফুল সাজানো বাগান
ফুটেছিলো সেইফুল গেয়েছিলো সুখপাখি বিজয়ের গান
ভূমিতে রক্তের দাগ সোঁদা মাটি এঁটেলে তো তারই প্রমাণ
আমার শহর থেকে আজকাল চুরি হয় দিনের আলোরা
আমাদের হস্তরেখা বুঝেনাতো বিশেষজ্ঞ জ্যোতিষী প্রখর
সম্মানিত চোরগণ বিজয় শরাব খায় ঠিক অতঃপর
তপাৎ বুঝেনা আজো এভূমিতে বাস করা সাদা ও কালোরা
তবুও বিজয় তুমি বারবার ফিরে এসো আমাদের হাতে
আমরা তোমাকে চাই সাহস ও বস্ত্রহীন শীতের প্রভাতে
নিকোটিন কাঁচের সাম্পান
একটি অতীত ফুল ফুটেছিল সবুজ বাগানে
মেঘের অপেক্ষা শেষে ঝরে পড়ে আহত সে ফুল
আশার বাঁধেতে বালি কষ্ট পায় এই তৃণমূল
এঅবাধ্য অধিকারে খোঁজে তারা জীবনের মানে
একটি রাত্রির শেষে খুলে যায় আলোর দোকান
আঁধার ভাঙ্গার শব্দে আশা জাগে পৃথিবীর বুকে
এ অসত্য অ-সুন্দরে মানবিক আশাহত সুখে
রূপোলি রোদের মতো নিকোটিন কাঁচের সাম্পান
কদম সকালগুলো ফেরি করে দুখ বর্ণমালা
কোথায়ও শান্তি নেই দিন কাটে সুখবরহীন
উড়াল মেঘের ছায়া নিয়ে আসুক স্বস্তির দিন
আহত জমিন বুকে দূর হোক অহেতুক জ্বালা
সমগ্র সম্রাজ্য জুড়ে লোভাতুর স্বার্থের তোরণ
আমরা পাহারা দিয়ে নিয়ে যাই কার গুপ্তধন
সন্ধ্যাচর্চা হ্যারিকেন কাল
বয়স হয়নি খুব তথাপিও ভুলে গেছি প্রেমিকার নাম
হেমন্ত সকাল ভাঁজে উঠোনের প্রান্ত ছুঁয়ে তার আগমন
সবুজ সমাজ জুড়ে তখনো উঠেনি বেড়ে নকল শহর
হারানো শৈশব আর ফুলতোলা স্মৃতিহাটে কতো সহচর
দুহাতে দুপুর ভেঙে আমাদের সন্ধ্যাচর্চা হ্যারিকেন কাল
মনে পড়ে ধূপখোলা কদমা ও বাতাসার পাতলা শরীর
ভিন্নস্বাদ সন্ধ্যাতারা দূর থেকে চোখে দেখা আদম সুরত
মেঘের জিরানিক্ষণ শিয়ালের বিয়ে রোদ টাপুর টুপুর
আহারে আমার সেই ঝমঝম, ডাকাতিয়া আমিহীন নদী
শহর বেড়েছে তাই প্রতিবেশী আজকাল নেয়না খবর
তোমাদের বুক জুড়ে জলযান যাত্রাপথে স্মৃতির শুশুক
আমাকে আহত করে রয়নার সরলতা মাছরাঙা ভোর
বয়স হয়নি খুব তথাপিও ভুলে গেছি প্রেমিকার নাম
কারক বিভক্তিহীন সেই তুমি এই আমি শুধু সর্বনাম
অন্যকোনো চোখ
ঈশ্বর তোমাকে দেখে নিশ্চয়ই অন্যকোনো চোখে
পারদ চাহনি আর সমীক্ষার আদিগন্ত রেখা
আঘাত সংকুল পথে বারবার তবু তুমি একা
বরফ সময় আর এ হেমন্তে অগণিত শোকে
পৃথিবী তোমাকে বাসে নিশ্চয়ই খুব বেশি ভালো
আয়োনিক রাতগুলো খসে পড়ে যেনো জোস্নাতারা
তোমার উপরে তাই দেখা যায় মেঘের পাহারা
মনু চেহেরের মতো বীরগণ কোথায় পালালো
সময় তোমার জন্য বয়ে আনে শুধু পুঁথিমালা
ইতিহাস অন্ধকারে বারংবার একাকিত্বে থাকে
সহস্রাব্দে কান্নাস্মর অচিহ্নিত কার ছবি আঁকে
সবিতো হারিয়ে যায়; পৃথিবীর বুকভরা জ্বালা
আমরাতো ভুলে যাই সবকিছু নিজস্ব স্বভাবে
বহুকিছু লোকায়িত এ পর্যাপ্ত আলোর অভাবে
সূর্য দেখিনি বহুদিন
সূর্য দেখিনি বহুদিন
একটি জাতির জন্য আজ খুব আলো প্রয়োজন
মুগ্ধতা মাখানো চাঁদ কারা যেনো ভাঁজ করে
লুকিয়ে রেখেছে আজ কৃষ্ণ গহ্বরে
সাহসী জোনাকি দল
ফেরারি হয়েছে তাই নিজ অন্তঃপুরে
চোখের আড়ালে ঘুম আলো খেয়ে বারবার
দু’হাতে ছড়িয়ে দেয় শুধু অন্ধকার
সূর্য দেখিনি বহুদিন
একটি জাতির জন্য আজ খুব আলো প্রয়োজন
রমনীর পাঠমুগ্ধ
রমনীর মুখায়বে যত্নে রাখা রূপের সোপান
ইতিহাস ফেরি করে কতো গুণি কতো সিঁদুখত
আর্ক জোয়ানার বীরত্বে সে কাহিনী উড়াল কপোত
সংগীত ও শিল্পকলায়ে কানে বাজে বিজিতের গান
ভূমির পরতে রাখা আমাদের ঐতিহ্যের সুর
নদী-নারী পুরুষের হাত ধরে বেঁচে থাকে প্রাণ
শীতের অলস ঘরে জলপাই মেহগনী ঘ্রাণ
একা একা তুমি খোঁজো ইতিহাস অচেনা দুপুর
আলোক প্রসঙ্গ নয় অন্ধকার চর্চার এ দেশ
খনন বিদ্যায় পর মুঠোভর্তি শস্যের সম্ভার
রহস্য রমনী পাঠ করো কারে জন্য উপহার
নক্ষত্র দেয়াল খসে তৈরি হয় ভালো পরিবেশ
তিল তিশি আমনের এ ভূমিতে সুখ সামিয়ানা
রমনীর পাঠমুগ্ধ ইতিহাস আমাদের জানা
শের-ই-জামসেদ
এক
তুমি নিত্য পাঠ করো রমনীর সমস্ত ভূগোল
আপেল সৌন্দর্য দেখে কার নাহি জিভে আসে লোল
দুই
চোখের অসুখ হলে এই দায় তুমি বলো কার
আমাদের আশেপাশে অগণিত সমৃদ্ধ সম্ভার
তিন
তুমি খোঁজ বৃষ্টি দিন আমি খুঁজি রৌদ্র আলো ছায়া
আকাশেতো ঢেকে রাখে কারো কারো ইতিহাস কায়া
এখানে বিকল্প কোনো পশুহাট নেই
এখানে বিকল্প কোনো পশুহাট নেই
নির্মোহ ও সত্যতারা প্রতিদিন কোরবানি হয়
মিথ্যা নামে হাটে!
এ যেনো অসভ্য এক জোহাকের স্বর্গরাজ্যপুরী
স্বপ্নহীন মানুষের ক্রন্দনে ক্রন্দনে ক্লান্ত
ঘাম রক্ত মেধা আর মন ও মনন
এখানে বিকল্প কোনো বুদ্ধিজীবি নেই
সব মাথা স্ববিক্রিত
শুনশান রাজ দরবারে
কালোবাজারীর মতো বাকিরা আড়ৎ এ আছে
দাম বাড়লেই নেমে আসে এই লোকালয়ে
কিছুই দেখেনা তারা প্রয়াণ-প্রলয়ে!
পৃথিবীর ভোর
হৃদয় দরজা খুলে চেয়ে দেখি পৃথিবীর ভোর
রাতগুলো ঠিকি জানে নক্ষত্রের গন্তব্য কোথায়
যে পথে পৃথিবী এসে বারবার শুধু থেমে যায়
ঘুমগুলো চুরি করে পালিয়েছে কোন নেশাখোর
সহসা কেমন জানি সবকিছু শুধু এলোমেলো
অধিকারে বাধ্য নয় আজকাল রাজা-প্রজা প্রীতি
কথাহীন সংবিধানে অসহায় পুষ্পবৃক্ষ বৃতি
ড্রাগন সময় এক সাহসের হৃৎপিণ্ড খেলো
সতত পাখির আজ ভুলে গেছে গান ও উড়াল
হেমন্তের এই ভোরে নকল রোদের হাতছানি
সকলতন্ত্রই এক, এ বিষয়ে শুনি কানাকানি
আমাদের চারপাশে ফাঁদপাতা শিকারির জাল
শাসক জনতা এক এই হোক শুভ সংবিধান
এই ষোলো ডিসেম্বরে গুছে যাক সব ব্যাবদান
কবিতা সংগ্রহ: চেনামুখ অচেনা শহর কাব্যগ্রন্থ থেকে
Array