নিজস্ব প্রতিবেদক
এবারের বইমেলায় প্রকাশিতব্য পান্ডুলিপির যাচাই করতে চায় ডিএমপি। ‘অস্থিতিশীল’ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে- এমন কন্টেট ঠেকাতে বাংলা একাডেমিকে অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
শুক্রবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে গিয়ে এসব কথা বলেন ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ও অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন নজরুল ইসলাম।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, আমরা একটা সমন্বয় সভা করেছি সেখানে তাদের আমরা রিকুয়েস্ট করেছি- যেখানে উসকানিমূলক কথা বা লেখা আছে এমন বই যেন মেলায় না আসে। এটা যেন একাডেমি স্ক্যানিং করে, ভেটিং করে স্টলে উপস্থাপন করেন। আশা করছি, তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন।
এসময় পাশ থেকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, এবারই আমরা একাডেমিকে সাজেস্ট করছি, আগামীতে নতুন যে বইগুলো প্রকাশিত হবে- আগে থেকেই সেসব পাণ্ডুলিপি যেন বাংলা একাডেমিকে জমা দেয়া হয়। একাডেমি এটা যাচাই-বাছাই ও পড়ে দেখবে যাতে এমন কোনো কন্টেন্ট যেন ছাপানো না হয়, যা আমাদের সোশাল লাইফকে ডিজরাপ্ট করে, আমাদের কমিউনাল হারমনিকে ডিজরাপ্ট করে, আমাদের দেশদ্রোহী কোনো বক্তব্য বা প্রকাশনা বা সরকারকে ডিস্টাবিলাইজ (অস্থির) করে- এরকম কোনো ধরনের প্রকাশনা যেন মেলায় না আসে। এটা আমরা রিকোয়েস্ট করেছি বাংলা একাডেমিকে।
পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আগামী বছর থেকে এটা আমরা করাতে পারব বাংলা একাডেমিকে দিয়ে যে- বই প্রকাশনার আগে পাণ্ডুলিপি তাদেরকে দিতে হবে। তারা অনুমতি দিলেই সেটা শুধু প্রকাশ হবে।
এবিষয়ে বইমেলার সদস্য সচিব সরকার আমিন বলেন, এরকম বিষয়ে পুলিশের কাছ থেকে দাপ্তরিক কোনো চিঠি আমরা পাইনি। বইমেলার জন্য তো একটা নীতিমালা আছে, সেই অনুযায়ী মেলা পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান গণি বলেন, বর্তমান সরকার সৃজনশীল কাজের সেন্সরপ্রথার বিপক্ষে বলেই আমরা জানি। তাই আমরা মনে করি, বই সেন্সর করার মতো কোনো সিদ্ধান্ত তারা নেবেন না।
গত বছর ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা’, ফাহাম আব্দুস সালামের ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’ ও জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ বই তিনটি বইমেলায় বিপণন করতে মানা করেছিল বাংলা একাডেমি।
সেই শর্ত না মানায় গতবার স্টল পায়নি ‘আদর্শ’। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল এ প্রকাশনা সংস্থাটি।
‘আদর্শ’র স্বত্তাধিকারী মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি নিজেও তো ভুক্তভুগী, এর আগের আমার প্রকাশনা সংস্থার বই বিনা কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা তো এখনো চলতে পারে না।
Array