ধর্ম ও জীবন ডেস্ক: ইসলামে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য শালীনতা, পর্দা এবং আচরণবিধির নির্দেশনা সুস্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তির মর্যাদা রক্ষা, সমাজে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
এই কারণেই ধর্মপ্রাণ নারীরা পর্দা পালন করেন। তবে দেখা যায়, অনেকে শরীর ঢাকলেও মুখ খোলা রাখেন। তখন প্রশ্ন আসে—মুখ খোলা রেখে পর্দা করা কি যথেষ্ট?
কুরআনের নির্দেশনা
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
“হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা এবং মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন বাইরে যাওয়ার সময় তাদের জিলবাব নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদের সহজে চেনা যাবে এবং তারা উত্যক্তের শিকার হবে না। আর আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা আহযাব: ৫৯)
এই আয়াত থেকে স্পষ্ট হয়, পর্দার বিধান শুধু নবীজির স্ত্রীদের জন্য সীমাবদ্ধ নয়; বরং তা সব মুসলিম নারীর জন্য প্রযোজ্য। বাইরে গেলে চেহারা আবৃত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে শুধু চোখ খোলা থাকে এবং প্রয়োজনীয় কাজ করা যায়। এজন্য কাপড় দিয়ে মুখমণ্ডল ঢেকে রাখা কিংবা নেকাব ব্যবহার করা—দুই পদ্ধতিই গ্রহণযোগ্য।
হাদিসের নির্দেশনা
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“নারীর জন্য মাহরাম ছাড়া অন্য পুরুষের সামনে আত্মপ্রকাশ করা বৈধ নয়।” (বুখারি, মুসলিম)
এই হাদিসও স্পষ্ট করে দেয় যে, নারীর মুখমণ্ডল পর্দার অন্তর্ভুক্ত এবং তা আবৃত করা অধিক জরুরি।
আলেমদের ব্যাখ্যা
প্রখ্যাত মুফাসসির ইমাম কুরতুবী (রহ.) বলেন, জিলবাব হলো এমন পোশাক যা নারীর শরীরকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত আবৃত রাখে। অর্থাৎ, সাধারণ পোশাকের উপর বিশেষভাবে যে পোশাক নারীরা ব্যবহার করেন, তাকে জিলবাব বলা হয়। আমাদের সমাজে এটি বোরকা নামে পরিচিত।
তাফসির অনুযায়ী, বাইরে যাওয়ার সময় নারীর জন্য আপাদমস্তক আচ্ছাদন আবশ্যক। আর আয়াতে উল্লেখিত ‘জিলবাব টেনে দেওয়া’র অর্থ হলো মাথা ও মুখমণ্ডল আবৃত রাখা। সাহাবী, তাবেয়ী ও বিশিষ্ট মুফাসসিরদের ব্যাখ্যা থেকেও এই বিষয়টি প্রতীয়মান হয়।
👉 সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়, ইসলামে নারীর মুখ ঢেকে পর্দা করা পরিপূর্ণ পর্দার অংশ এবং তা পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Array