অনলাইন ডেস্ক: কিশোর বয়সে সন্তানের অবসাদের ঝুঁকির প্রধান কারণ একটি বিশেষ অভ্যাসকে দায়ী করা হয়েছে, যা হলো— সামাজিক মাধ্যমে ডুবে থাকা। সাম্প্রতিক গবেষণায় এই সাধারণ অভ্যাসের দিকে নির্দেশ করে বলছে যে, এটি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। ছোটদের অবসাদের নেপথ্যে আরও একাধিক কারণ থাকতে পারে। এই যেমন পড়াশোনার চাপ, কটাক্ষ বা কৈশোরকালে দেহে হরমোনের তারতম্য। তবে এর নেপথ্যে গবেষকরা চিহ্নিত করেছেন সামাজিক মাধ্যম, যার ওপর অনেক সময়েই গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার পেডিয়াট্রিকস বিভাগের একদল গবেষক ছোটদের অবসাদ নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন। ‘জামা নেটওয়ার্ক’ জার্নালে তা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে— কৈশোরে পা দেওয়ার আগের বছরগুলোতে ছোটদের অবসাদের জন্য দায়ী সামাজিক মাধ্যম।
গবেষকরা জানতে চেয়েছিলেন, সামাজিক মাধ্যমের কারণেই ছোটরা অবসাদে আক্রান্ত হচ্ছে, না কি অবসাদে আক্রান্তরা বেশি সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করছে। তার জন্য গবেষকরা তিন বছর ধরে ১২ হাজার ছেলেমেয়ের ওপর গবেষণা চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
এ থেকে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে অনেক কিশোর অবসাদে আক্রান্ত হয়েছে। আর অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার পর তারা বেশি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করেনি। জানা গেছে, প্রথম বছরে যে কিশোররা দিনে ৭ মিনিট সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করত, দ্বিতীয় বছরে তা ৭৩ মিনিটে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সার্বিকভাবে তা ছোটদের অবসাদের আশঙ্কা ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অধ্যাপক জেসন নাগাটা বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যে, সামাজিক মাধ্যমের ক্রমাগত ব্যবহার কৈশোরের প্রাক্কালে ছোটদের অবসাদের অন্যতম কারণ।
এই প্রসঙ্গে ‘দ্য ল্যানসেট রিজিওনাল হেল্থ’ জার্নালে প্রকাশিত আরেক গবেষণাপত্রে জানা গেছে, ১১ থেকে ১২ বছরের শিশুর মধ্যে যারা সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত কটাক্ষের শিকার হয়েছে, তারা একজন সাধারণ শিশুর তুলনায় ২.৬২ শতাংশ বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ মানসিকতার কথা ব্যক্ত করেছে।
এ বিষয়ে ‘দ্য আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস’ কিছু পরামর্শ দিয়ে বলেছে, কৈশোরে প্রবেশের আগে ছোটদের মোবাইল ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা উচিত। তার জন্য বাবা-মায়েদেরই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। প্রয়োজনে ছোটদের শেখানোর জন্য বাবা-মায়েরাও বাড়িতে মোবাইলের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি ছোটদের সামাজিক মাধ্যমের নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে সতর্ক করতে পারলেও সমস্যার সমাধান হতে পারে।
Array