অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে মহেশখালী-মাতারবাড়ী অঞ্চলে শুধু গভীর সমুদ্রবন্দর নয়, বরং একটি আধুনিক শহর গড়ে তোলার ভিশন সামনে এনেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর মতে, এই উদ্যোগ দেশের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ “ব্লু ইকোনমি”র ভিত্তি স্থাপন করবে এবং মহেশখালী হবে আন্তর্জাতিক সংযোগের নতুন দ্বার।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নবগঠিত মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (মিডা) সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে এ পরিকল্পনার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুণ, সদস্য কমোডর তানজিম ফারুক ও মো. সারোয়ার আলম, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না।
বৈঠকে মহেশখালী-মাতারবাড়ী প্রকল্পের অগ্রগতি ও কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। আশিক মাহমুদ জানান, প্রকল্পটি তিন ধাপে বাস্তবায়ন হবে। প্রথম ধাপ চলবে ২০২৫ থেকে ২০৩০ পর্যন্ত, দ্বিতীয় ধাপ ২০৩০ থেকে ২০৪৫ এবং শেষ ধাপ ২০৪৫ থেকে ২০৫৫ সাল পর্যন্ত। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে এবং দেশের জিডিপিতে যোগ হবে দেড়শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, “আমরা সমুদ্র জগতে কখনো প্রবেশ করিনি। এই খাত নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা কিংবা গবেষণাও হয়নি। এখনই সময় আন্তর্জাতিক গবেষণার সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের গবেষণা শুরু করার। এজন্য প্রতিষ্ঠান দরকার, একাডেমিয়া দরকার। মহেশখালীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ সুবিধা গড়ে তুলতে হবে এবং ব্লু ইকোনমি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে হবে।”
তিনি পরিবেশ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। বৈঠকে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলার বিষয়েও আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রফেসর ইউনূস বলেন, “সেখানে বনভূমি এখন কোন অবস্থায় আছে এবং ভবিষ্যতে কী অবস্থায় দেখতে চাই, তা স্পষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, সমুদ্রই হবে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের মহাসড়ক। তাই মহেশখালী কেবল একটি শিল্পকেন্দ্র নয়, বরং একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক শহর হিসেবে গড়ে উঠবে, যা দেশের অর্থনীতি ও বৈশ্বিক সংযোগের নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
Array