ভোলা জেলা প্রতিনিধি :
মাত্র পাঁচ হাজার টাকার একটি বাচ্চা ছাগল থেকে পাঁচ বছরে দশ লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন ভোলার বেড়িবাঁধবাসী নুরে আলম। পৈত্রিক ভিটিমাটি সবই মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বহু আগে। অসহায় পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বেড়িবাঁথের ঢালে অন্যের জমিতে। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন মেঘনার নদীতে মাছ ধরা। তাও অন্যের নৌকায় ভাগীদার হিসেবে মাছ ধেরেন। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে টেনেটুনে। তবে স্ত্রী বেশ কর্মঠ। তিনি বাড়িতে হাঁস মুরগি লালন পালন করেন। পাশাপাশি উচু বেড়ির ঢালে লাউ সিমসহ বিভিন্ন সবজি লাগিয়ে সংসারের চাহিদা খানিকটা যোগান দেন।
বছর পাঁচের আগে একদিন নুরে আলম তার জ্যেঠার সাথে দেখা করতে গিয়ে দেখেন জ্যেঠার বেশ কয়েকটি ছাগল। ছাগলগুলো দেখে তারও ইচ্ছা জাগে ছাগল পালনের। জ্যেঠার সাথে কথা বলে ৫ হাজার টাকা দিয়ে নিয়ে আসন একটি বাচ্চা। ওই বাচ্চা ছগলটিই নুরে আলমের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। গত পাঁচ বছরে নুরে আলম দশ লক্ষাধিক টাকার ছাগল বিক্রি করেছেন। এখনো তার কাছে ছোট বড় মিলিয়ে ১৭টি ছাগল রয়েছে।
নুরে আলম জানান, ছাগল পালনে বিশেষ খরচ নেই। মাত্র ৮ শতাংশ জমি নগদ টাকায় লগ্নি রেখেছেন। জমিটা নদীর পাড়ে হওয়ায় বর্ষায় পানি জমে না। ওই জমিতে মাঝে মধ্যে কিছু সার ছিটিয়ে দেন। আর তা থেকে সারা বছর ছাগলের জন্য ঘাস কেটে আনেন। সরজমিনে দেখা যায় বেড়িবাধের উপর একটি চাঙ্গারি বা চাড়ি (গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মাটি বা সিমেন্ট দিয়ে তৈরি পাত্র বিশেষ) । তাতে কিছু ঘাস দিয়ে রেখেছেন নুরে আলম। কয়েকটি ছাগল গরুর মত ওই চাড়ি থেকে ঘাস খাচ্ছে। সন্ধ্যা হলে নিয়ে রাখেন ঘরে। ছাগলের জন্য একটি ঘর করেছেন। ওই ঘরের মধ্যেই অর্ধেকটায় মাটি থেকে দুই ফুট উচু করে বাঁশে চেরার মাচা বানিয়ে আর একটি ঘর করেছেন। নুরে আলম জানান, এভাবেই তিনি ছাগলগুলো লালন পালন করছেন। দিনের বেলা বাঁধের উপরে বেঁধে রাখেন। বৃষ্টি বাদল হলে ঘরে নিয়ে আসেন। ছাগলের ঠাণ্ডা লাগলে বিপদ। তাই রাতের বেলা মাটি থেকে উচুতে মাচার উপর রাখতে হয়। এসব কাজে তার স্ত্রী বেশ সহায়তা করেন।

নুরে আলম জানান, ছাগলের রোগবালাই কম। ঠাণ্ডা আর পাতলা পায়খানা ছাগলের সাধারণ রোগ। এসব দেখা দিলে বাজারে গিয়ে দোকান থেকে ঔষধ নিয়ে আসেন। এছাড়া পশু হাসপাতালের লোকজন এসে মাঝেমধ্যে বিনা পয়সায় ভেকসিন দিয়ে যায়। তবে তাকে ছাগল প্রতি ২০ টাকা করে দিতে হয়। এতে নুরে আলম সন্তুষ্ট। কিন্তু বড় কোন রোগ হলে পশু হাসপাতালের আলী ডাক্তারকে ডাকতে হয়। তিনি ছাগল প্রতি হাজার টাকার নিচে নেন না। কেখনো কখনো তাকে দুই হাজার টাকাও দিতে হয়। আবার আলী ডাক্তারকে ডাকলে তিনি বিনা টাকায় কান ঔষধ দেন না। সিল্পিপ লিখে দেন। শর্ত তার মালিকানা দোকান থেকেই ওই ঔষধ কিনতে হবে। অথছ দামও রাখেন অন্যান্য দোকান থেকে বেশি। নুরে আলমের দাবি পশু হাসপাতালের লোকজন যদি নিয়মিত এলাকায় এসে খোঁখ খবর নিতো অথবা প্রয়োজনে ডাকলেই পাওয়া যেত এবং উপসহকারী কৃষি অফিসারদের মত টাকা ছাড়া বুদ্ধি পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দিত তা হলে মানুষ গরু ছাগল লালন পালন করে উপকৃত হতো।
Array
 
 
                            
                        
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            
                                                
                                            